‎গল্প: ভালোবাসার সাতপাকে বাঁধা ইয়াস মধুমিতা

 

ছবির উৎস: Facebook

‎কলকাতার এক কোণে, শীতের এক সকালের আলো গড়িয়ে পড়ছিল জানালার কাঁচে। বিয়ের দিন, বহু প্রতীক্ষিত সেই দিন — ইয়াস আর মধুমিতার জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু হওয়ার দিন।

‎ইয়াস জানালার পাশে দাঁড়িয়ে সূর্যের আলোয় মুখ ডুবিয়ে রেখেছিল। তার চোখে ছিল আনন্দ আর অদ্ভুত এক উত্তেজনা।

‎ইয়াস বললো, "আজ আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। আর যাকে আমি ভালোবাসি, সে আজ আমার চিরসঙ্গী হবে… বিশ্বাস করতে পারছি না!"

‎ওদিকে মধুমিতা বসে ছিল মেকআপ চেয়ারে। লাল বেনারসি, গয়নার ঝলকানি আর চোখে কাজল — যেন স্বপ্নের রাজকন্যা।

‎মধুমিতা বললো, "বিয়ের দিনটা কেমন যেন এক রূপকথার মতো লাগছে। ছোটবেলায় ভাবতাম, বিয়ে মানেই একদিন প্রিন্স চার্মিং এসে বলবে — ‘চলো, তোমায় নিয়ে যাই’। আজ সেই স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে!"

‎ঘর ভরে উঠছিল সানাইয়ের সুরে, গানের তালে অতিথিদের হাসি, আর আলো ঝলমলে সজ্জায় — যেন এক রাজকীয় সাজ।

‎বিয়ের মণ্ডপে যখন সবাই বসে গেল, ইয়াসের চোখ শুধু খুঁজছিল মধুমিতাকে। মধুমিতা এল ধীরে ধীরে, কাঁধে লাল ওড়না, কপালে টিপ আর ঠোঁটে হালকা হাসি।

‎ইয়াস বললো, "তুমি এতো সুন্দর লাগছো যে চোখ ফেরানোই যাচ্ছে না… যেন দেবী আসছেন আমার জীবনে আশীর্বাদ নিয়ে।"

‎মধুমিতা বললো, "তুমিই তো বলেছিলে একদিন, ‘তোমাকে বিয়ে না করলে জীবন অসম্পূর্ণ থাকবে।’ আজ দেখো, সেই অসম্পূর্ণতাই পূর্ণ হতে চলেছে।"

‎পাণ্ডিতজি মন্ত্র পড়তে পড়তে বললেন, "সাতপাকের প্রতিটি পাক মানে এক নতুন অঙ্গীকার, এক নতুন পথ চলা।"

‎প্রথম পাকের সময় ইয়াস বললো, "আমি তোমায় প্রতিদিন ভালোবাসবো — শুধু কথায় নয়, কাজে, চোখে, স্পর্শে।"

‎মধুমিতা বললো, "আমি প্রতিদিন তোমার পাশে থাকবো — রাগে, অভিমানে, হাসিতে আর কান্নায়।"

‎দ্বিতীয় পাক, তৃতীয় পাক… প্রতিটা পাক যেন ছিল ভালোবাসার একটি করে গল্প।

‎সপ্তম পাকের সময়, ইয়াস বললো, "যদি সময় থেমে যেতো, আমি চাইতাম এই মুহূর্তটা চিরকাল থেকে যাক… ঠিক এইভাবে, তোমার হাত ধরে।"

‎মধুমিতা বললো, "সময় থামবে না ইয়াস, কিন্তু আমরা একসাথে থাকলে প্রতিটি মুহূর্ত হবে স্মরণীয়… একসাথে বাঁচবো, একসাথে স্বপ্ন দেখবো।"

‎বিয়ের পর যখন সবাই বিদায় জানাতে আসছিল, তখন মধুমিতা একটু আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল।

‎মধুমিতা বললো, "ছেড়ে যেতে কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু জানি, এক নতুন পরিবার, এক নতুন জীবন অপেক্ষা করছে।"

‎ইয়াস বললো, "তোমার চোখে জল মানে আমার বুক কাঁপে। আসো, আমরা একসাথে হাসতে শিখি আবার…"

‎বাড়িতে প্রবেশের মুহূর্ত, লক্ষ্মী হিসাবে বরণ, আলতা-পায়ে ধরা নতুন পথচলা… সবই যেন ছিল সিনেমার চেয়ে সুন্দর।

‎রাতের খাবারে দুজনেই বসেছিল ছাদের নিচে, চারপাশে চাঁদের আলো।

‎ইয়াস বললো, "জানো, আমি জীবনে অনেক স্বপ্ন দেখেছি — কিন্তু সব স্বপ্নের চেয়ে সুন্দর তুমি।"

‎মধুমিতা বললো, "তুমি ছাড়া আর কিছু চাই না আজ থেকে। শুধু বলো, প্রতিদিন এইভাবেই আমার দিকে তাকাবে তো?"

‎ইয়াস বললো, "প্রতিদিন নয়, প্রতি নিঃশ্বাসে… যতক্ষণ প্রাণ আছে।"

‎একটি হালকা হাওয়া এল, মাধবীলতা ফুলের গন্ধ ছড়িয়ে দিল।

‎মধুমিতা বললো, "এই গন্ধটা ঠিক আমাদের ভালোবাসার মতো — মিষ্টি, নরম আর চিরন্তন।"

‎সেই রাতটা ছিল নিঃশব্দে প্রতিজ্ঞা করা, একে অপরকে ভালোবাসার, সম্মান করার, পাশে থাকার।

‎আকাশের তারা যেন মিলে মিলে বলছিল — আজ থেকে ইয়াস আর মধুমিতা, শুধু নাম নয়, হয়ে গেছে এক গল্প… এক অটুট বন্ধন।

Comments

Popular posts from this blog

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে মধুমিতা সরকার আবার বিয়ের পিঁড়িতে? প্রেমিক দেবমাল্যর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ঘিরে জোর গুঞ্জন!

প্রথমবার একসঙ্গে রায়হান রাফী ও জিৎ, আসছে টলিউডের ব্যতিক্রমী অ্যাকশনধর্মী ছবি ‘লায়ন’

তিন জনপ্রিয় নায়িকা একসাথে ফিরছেন ছোট পর্দায়? শুরু হয়েছে জল্পনা! রয়েছেন মধুমিতাও